মাহফুজ রিপন




জলিধান পিরিত

গোবরা চাষা গাবতলার ভুঁইতে একোজ জলি ধান বোনে।
বীজ আর কাঠাইয়া ধামার চট, পট শব্দে-
উড়ে আসে এক ঝাঁক জালালি কৈতর।
তখন গোবরার শক্ত ঠোঁট দুটো বির বির করে নড়তে থাকে।
জলিধান- জলকাঁদায় জন্ম যার হাঁটুজলে কর্তন।
বাঁশফুল, বর্নজিরা, মধুমাধব, দুধরাজ, পঙ্খিরাজ-
কত সে নামের বাহার। 
ব্রি’র ব্যর্থতায় মুছে গেল সব ধান দূর্বার গৌরব।
আমরা ভাত খাই ঠিকই হাড়ির খবর রাখিনা।
নিভু নিভু মাটির পিদিমে সন্ধ্যা নামে
চুলার পিঠে ছফুরা বানু হাড়িতে দশমাইল দেয়।
মাড়ভাতের ঘ্রাণ পৌঁছে যায় মোল্যাবাড়ি থেকে ফকির বাড়ি।
সোনাধানের আমোদে ভরে ওঠে গাজী কালুর উঠোন।
রাত গভীর হলে পোয়াতি ছফুরার ঘুম ভাঙ্গে।
দু-ঢোক চুমুক দিয়ে ঘরে ফেরে নিশাচর গোবরা চাষা
শরীর দুটো এক হয় সেগুন কাঠের পালঙ্কে।
রাত আরো গভীর হয়-
শুরু হয় তাদের বিনা পয়সার একোজ জলিধান পিরিত।




অধরা তিস্তা ব্যারেজ

অধরা ডাক দিয়েছে সাঁই; তাই ঘুরছি- 
জলে স্থলে অন্তরীক্ষে।
মাইমের হলুদ পাখির মত-
অধরা হেঁটে যায় উখিয়ার পথে-
পায়ের ভাঁজে ভাঁজে ক্লান্তি জমে
অধরা মিশে যায় আইভির চির সবুজে।

তখন দক্ষিন ক্যালিফোনিয়ার পাঁচ হাজার-
ফুট উচু পাহাড় থেকে নেমে আসে বসন্তের রেশম জল।
কোমল অতি হালকা সে জলের ওজন।

মাইমে হাঁটে মুসাফির-
পিছনে জমতে থাকে ম্যাগালো সিটি।
দেশভাগ কাঁটাতারের ওপারে সাধের অধরা।
মননে শূন্যতার গোল গোল ছবি এঁকে যায়।
বোতলে ঠান্ডা রেশম জল- সাঁই জল পান করে;

অধরার নেশায়-
মাঝ রাতের উদাসি হাওয়া সোম টান দেয়।
তখন দু-দেশের তিস্তা ব্যারেজ নৈঃশব্দে চিরদিনের জন্য খুলে যায়।







0 comments:

Post a Comment